Friday 10 February 2017

এডভান্সড গুগল সার্চের নিয়মাবলী

ইন্টারনেট ব্যবহারের মুল লক্ষ্য হচ্ছে ইনফরমেশন আদান-প্রদান। ইনফরমেশনের জন্য আমরা সবচেয়ে বেশি নির্ভর করি গুগলের উপর। এই পোষ্টে গুগলে কিভাবে এডভান্সড সার্চ করতে হয় তা শেখান হবে।

www.google.com , এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন। গুগল সার্চ বক্সে আপনি যাই লিখেন , কোন না কোন রেজাল্ট অবশ্যই পাবেন। হয়ত আপনি যেটা বুঝাতে চাইছেন , সেটা না পেয়ে অন্য একটা রেজাল্টও আসতে পারে। যেমনঃ Rose মানে গোলাপফুল, আবার এটা দ্বারা মানুষের নাম ও বুঝায়। তাই আপনার কাঙ্খিত রেজাল্ট পেতে এডভান্সড সার্চ জানা অত্যন্ত জরুরি।

গুগল হোমপেইজ পরিচিতিঃ

গুগল এ ঢুকার পর আমরা একটা বক্স দেখতে পাই, যেটা সার্চবক্স নামে পরিচিত। সার্চ বক্সে আমরা যাই লিখি তাকে কিওয়ার্ড (Keyword) বলে। কিওয়ার্ড এক শব্দ বা একাধিক শব্দের হতে পারে। আপনি যে কোন কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে, ১০টি সার্চ রেজাল্ট এবং কিছু বিজ্ঞাপন , কিছু ইমেজ অথবা ভিডিও রেজাল্ট প্রদর্শিত হয়। এছাড়াও কিছু রিলেটেড কিওয়ার্ড সাজেশন আকারে প্রদর্শন করে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা এই ১০টি রেজাল্টের ভিতর ১টি ওয়েবসাইট ভিজিট করি। কিন্তু সঙ্গতিপূর্ণ রেজাল্ট না আসলে পরের পেইজগুলোতে যাই বা কিওয়ার্ড চেঞ্জ করি। নিচে দেখানো হবে কিভাবে কিওয়ার্ড চেঞ্জ না করেই কাঙ্খিত রেজাল্ট পাওয়া যায়।

1. Quotation Mark : ধরুন আপনি সার্চ করলেন pendrive in bangladesh , কিন্তু বারবার রেজাল্ট আসছে flash drive in Bangladesh . তখন আপনাকে Quotation mark ব্যবহার করে সার্চ করতে হবে। “Pendrive in Bangladesh” এভাবে সার্চ করুন।

2. মাইনাস ওয়ার্ড ( -word ) : ধরুন আপনি মোবাইল কিনবেন। কিন্তু Nokia Set আপনার পছন্দ না। তাহলে এই টেকনিকটি কাজে আসবে। আপনি সার্চ করতে হবে “ Mobile Phone Bangladesh –nokia ”

3. মাইনাস সাইট (- site): উপরের একই নিয়মে আপনি যদি কোন ওয়েবসাইট সার্চ রেজাল্ট থেকে বাদ দিতে চান তাহলে আপনার সার্চ করার জন্য কিওয়ার্ডটি হবে
“Mobile Phone in Bangladesh –site:www.nokia.com

4. 100$..150$ এর মানে হচ্ছে আপনি ১০০ ডলার থেকে ১৫০ ডলার এর ভিতর মোবাইল ফোন কিনতে আগ্রহী। এভাবে সার্চ করলে শুধুমাত্র যেসব মোবাইল এই দামের ভিতর সেগুলোই প্রদর্শিত হবে।

5. FileType : আপনি একটি বাংলা গান খুজছেন যেটা mp3 format হলে ভাল হয়। কিন্তু কোথাও mp3 format পাচ্ছেন না। তখন আপনাকে সার্চ করতে হবে। “ek nodi rokto periye filetype:mp3”
আরও কিছু ফাইল টাইপ হলঃ mp3, mp4, avi, 3gp , vov , amr , rar , pdf , docx , xls , jpg , jpeg , gif , png, psd এবং আরও অনেক ফাইল রয়েছে। আপডেট করা হবে।


7. Blog:keyword এইভাবে সার্চ করলে শুধুমাত্র ব্লগ ওয়েবসাইটগুলো আপনার রেজাল্ট পেইজে প্রদর্শিত হবে।

8. Forum:keyword এইভাবে সার্চ করলে শুধুমাত্র ব্লগ ওয়েবসাইটগুলো আপনার রেজাল্ট পেইজে প্রদর্শিত হবে।

9. Driectory:keyword এইভাবে সার্চ করলে শুধুমাত্র ব্লগ ওয়েবসাইটগুলো আপনার রেজাল্ট পেইজে প্রদর্শিত হবে।

10. https://www.google.com/ncr প্রতিটি দেশের জন্য গুগলের সার্চ রেজাল্ট আলাদা। তাই আপনি যদি শুধু বাংলাদেশ ভিত্তিক সার্চ রেজাল্ট না দেখতে চান, তাহলে এই লিঙ্ক ভিজিট করুন। NCR = No Country Restriction
সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

Thursday 9 February 2017

ক্যারিয়ার হিসেবে আর্টিক্যাল রাইটিং

“ক্যারিয়ার” মানেই কি আমরা মনে করি, মেডিকেল সায়েন্স অথবা, ইঞ্জিনিয়ারিং-এই ক্যারিয়ার গড়তে হবে?

ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হতে ব্যর্থ হলে জীবনে আর তেমন কিছুই করা সম্ভব না- এই কথাটি ইন্টারনেটের যুগে আসলেই বেমানান।
ইন্টারনেটের এই যুগে আমরা গোটা পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় যখন আনতে পেরেছি, তখন আমাদের যেকোন প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে আমরা সফলভাবে ক্যারিয়ার গড়তে পারি।

তবে কেন সেই ব্যক্তি আর্টিক্যাল রাইটিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারবে না যার কিনা লেখালেখিতে অসাধারন প্রতিভা আছে?

এটা কি আসলেও কাম্য? আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি আর্টিক্যাল রাইটিং ক্যারিয়ার হিসেবে কেমন হতে পারে?

ক্যারিয়ার হিসেবে আর্টিক্যাল রাইটিং

বর্তমান যুগে বেশিরভাগ কাজই এখন অনলাইনভিত্তিক। আর এই কথাটি বললে ভুল হবে না যে অনলাইন মার্কেটিং জগৎ এখন আর্টিক্যাল রাইটিং এর উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল।

সুতরাং এটি নিঃসন্দেহে বলা যায় যে একজন ভালো মানের আর্টিক্যাল রাইটার এর গুরুত্ত অনেক বেশি। আর গুরুত্ত আছে বলেই তার আয়ও বেশি হবে- এটাই কি স্বাভাবিক নয়?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, চাইলেই কি ভালো মানের রাইটার হওয়া সম্ভব? কেন নয়? অবশ্যই সম্ভব। আর এটা বলছি নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই। আর্টিক্যাল রাইটিং সম্পর্কে প্রথম শুনেছিলাম আমার মায়ের কাছ থেকে। তারপর বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন এবং ইন্টারনেট এর মাধ্যমে এর বিস্তারিত জানতে পারি। প্রথমে ভাবতাম অনেক কঠিন কাজ। দ্বিধায় ভুগছিলাম সফল হতে পারব কিনা। সাহস যুগিয়েছিল তখন মা। অনেক চেষ্টার পর ওডেস্কে আর্টিক্যাল রাইটিং এর একটি কাজ পেয়ে যাই এবং সফলভাবে কাজটি সম্পন্ন করায় ক্লায়েন্টও সন্তুষ্ট হয়।

আর্টিক্যাল রাইটিং এর প্রথম ফিডব্যাক আর আজ আমি আপনাদের সাহস দিচ্ছি, চেষ্টা করলে আপনারাও অবশ্যই সফল হতে পারবেন। শুধু প্রয়োজন বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষতা। প্রফেশনাল রাইটার হতে হলে যেসব বিষয়ে নজর রাখতে হবে প্রথমত, ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। তৃতীয়ত, রিসার্চে দক্ষ হতে হবে এবং সেই সাথে প্রয়োজন ধৈর্য। চতুর্থত, প্রচুর পরিমানে লেখার চর্চা করতে হবে। পঞ্চমত, সময় এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে। এখন আপনি যদি আর্টিক্যাল রাইটিং এ যথেষ্টই উৎসাহী হন, তবে দেখে নেয়া যাক একটি ভালো মানের আর্টিক্যাল লিখতে হলে যেসব অংশে বিশেষ গুরুত্ত দিতে হবে।

আর্টিকেলের অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশসমূহ
আর্টিকেলের অংশসমূহ
টাইটেল
প্রথমেই একটি আর্টিকেলের যে অংশটি আমাদের নজরে আসে সেটি হলো আর্টিক্যালটির টাইটেল। টাইটেল এর উপর ভিত্তি করেই পাঠক সেটি পড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। সুতরাং, ভালো মানের আর্টিক্যাল লিখতে হলে অবশ্যই একটি নজরকারা টাইটেল নির্বাচন করতে হবে এবং আর্টিকেলের বিষয়টি যেন তাতে সম্পূর্ণই প্রতিফলিত হয়।
সূচনা
আর্টিক্যালটির সূচনা করুন এমনভাবে যেন তার বিষয় সম্পর্কে পাঠকরা পরিষ্কার ধারণা লাভ করতে পারে এবং পাঠক যেন তা পড়ার আগ্রহ ধরে রাখতে পারে।
মূল বিষয়
আর্টিকেলের মূল বিষয়টি কয়েকটি অনুচ্ছেদের মাধ্যমে বিস্তারিত বর্ণনা করুন। তবে অপ্রাসঙ্গিক অথবা অপ্রয়োজনীয় কথা দিয়ে আর্টিক্যালটি অযথাই বড় করবেন না। এতে পাঠক তার পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। পাঠকের আরও বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অনুচ্ছেদগুলোরও উপযুক্ত নামকরণ করে ফেলুন।
ছবি
আর্টিকেলে ছবি যুক্ত করার মাধ্যমে সেটিকে আরও বেশি জীবন্ত করে তুলুন। যেকোনো বিষয় বোঝার ক্ষেত্রে এটি অনেকাংশে সাহায্য করে এবং এতে পাঠক সম্প্রদায় লেখাটি পড়তে আরও বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে।
সংযোগ স্থাপন
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- আর্টিকেলের এক অংশের সাথে আরেক অংশের মধ্যে কিছু সংযোগমূলক কথা লিখুন যাতে পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখা যায়।
সর্বশেষ অংশ
আর্টিকেলের সর্বশেষ অংশে একটি চূড়ান্ত মতামত, মন্তব্য, পরামর্শ অথবা সম্পূর্ণ বিষয়টিকে সংক্ষিপ্তাকারে উপস্থাপন করুন।
এসব বিষয়ে সতর্ক থাকলে আপনি আর্টিক্যাল রাইটিং এ সফলভাবে এগিয়ে যেতে পারবেন। তবে লেখা শুরু করার আগে অবশ্যই কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
মনে রাখুন-
আপনার লেখাটি কোথায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে- পত্রিকা, ম্যাগাজিন, ব্লগ অথবা কর্পোরেট ওয়েবসাইট?
কাদের উদ্দেশ্যে লিখছেন- শিক্ষার্থী, কিশোর-কিশোরী নাকি সাধারণ মানুষের জন্য?
আপনার লেখার উদ্দেশ্য কি- উপদেশ, পরামর্শ, কোন বিষয় অবগত, বর্ণনা নাকি তুলনা করা?
আপনার আর্টিকেলের আলোচ্য বিষয়গুলো প্রথমে ড্রাফ্‌ট করুন। তারপর সেসব আর্টিকেলে ধারাবাহিকভাবে বিস্তারিত লিখুন।
এসব বিষয়ের প্রতি খেয়াল রেখে আর্টিকেলের ভাষা এবং ধরণ ঠিক করুন।

আপনার আর্টিকেলের ভাষা হতে পারে ফরমাল, সেমি-ফরমাল অথবা ইনফরমাল যা নির্ভর করে পাঠক সম্প্রদায়ের উপর এবং সেটি কোথায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে তার উপর।
আর্টিকেলে কখনই অতি-ব্যক্তিগত অথবা অতিরিক্ত ইমোশনাল আলোচনা করবেন না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো লেখা শুরুর আগে অবশ্যই সেই বিষয়ের খুঁটিনাটি যথেষ্ট রিসার্চ করুন। আর্টিক্যালটি এমনভাবে লিখুন যেন আপনি পাঠকদের সাথে সরাসরি কথা বলছেন। একজন লেখক নয়, পাঠকের দৃষ্টিকোণ বিচার-বিশ্লেষণ করে তবেই লিখুন।

ছোটবেলা থেকেই আমরা সবাই একটি কথার সাথে অতি পরিচিত- “পরিশ্রম সৌভাজ্ঞের প্রসূতি”। অর্থাৎ, যেকোনো কাজে সফল হতে হলে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে। তেমনি আর্টিক্যাল রাইটিং খুব সহজেই শুরু করা গেলেও, এর মানোন্নয়নের জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তাহলে চলুন দেখি লেখার মানোন্নয়নের জন্য কি কি করা যেতে পারে।

লেখার মানোন্নয়নে করণীয় বিষয়
উন্নতমানের ব্লগপোস্টগুলো পড়ুন।
তাদের লেখার ধরণ অনুসরণ করুন।
কিন্তু কখনও তাদের লেখা হুবহু কপি করবেন না। লেখাগুলো পড়বেন শুধুমাত্র আইডিয়া পাবার জন্য।
প্রচুর পরিমাণে আর্টিক্যাল লেখার চর্চা করুন।
লেখার মানোন্নয়নে এটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

কপি পোস্ট 

Saturday 4 February 2017

যখন পরিবেশ-পরিস্থিতি তোমার প্রতিকূলে চলে যায় - ভয় পেয়ো না

বাণিজ্যিক মালবাহী জাহাজটি সমুদ্রের মধ্যভাগে এসে আটকে গেলো। রসদ, মাল-সামানা বেশি হওয়ার দরুন ডোবার উপক্রম হলো। জাহাজের ক্যাপ্টেন জাহাজ বাঁচানোর জন্যে পরামর্শ দিলেন, জাহাজের কিছু মাল সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হোক, এতে জাহাজের ভার অনেক কমে যাবে, জাহাজও বেঁচে যাবে।

তখন সব ব্যবসায়ী ঐক্যমতে পৌঁছল যে, তারা একজন ব্যবসায়ীর সব মাল সমুদ্রে ফেলে দিবে। তখন ওই ব্যবসায়ী আপত্তি তুলে বললো, শুধু আমার মাল সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হবে কেনো? সে বললো, সবার মাল থেকে সামান্য সামান্য করে নিক্ষেপ করা হোক, যাতে একজনের উপর ক্ষতি বেশি না হয়ে যায়, ক্ষতির ক্ষেত্রে সবাই সমানে সমান হয়ে যায়। এতে বাকী ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে গেলো, তাই তারা এই নতুন দুর্বল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে তাকে ও তার মালসমূহকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করে দিল। এরপর তারা জাহাজ নিয়ে সফর শুরু করলো...

সমুদ্রের প্রচন্ড ঢেউ ওই ব্যবসায়ীকে নিয়ে খেলতে লাগলো, সে ডুবে যাওয়ার ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত ছিলো, ক্রমেই ভীত থেকে ভীততরো হচ্ছিল, এমতাবস্থায় সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলল, যখন সে হুঁশ ফিরে পেলো, তো দেখতে পেলো, সমুদ্রের ঢেউ তাকে একটি অপরিচিত বিক্ষিপ্ত দ্বীপের পাড়ে নিয়ে ফেলেছে...
,
ব্যবসায়ী ধীরে ধীরে পূর্ণ চেতনা ফিরে পেতে লাগলো, স্থিরভাবে শ্বাস-নিশ্বাস নিতে লাগলো, আস্তে আস্তে উঠে বসে দুনো হাঁটু দাঁড় করিয়ে সেখানে মাথা রাখলো, অঝোর অশ্রুতে এবার কান্না শুরু করলো, কায়মন্যে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলো, আল্লাহ যেনো তার জন্যে কোনো ব্যবস্থা করে দেন, এই কঠিন ব্যবস্থা থেকে তাকে উদ্ধার করেন।

কয়েকদিন অতিবাহিত হলো, ব্যবসায়ী এই কয়দিনে গাছের ফল পেড়ে, বিভিন্ন খরগোশ শিকার করে আহার উপার্জন করতে লাগলো। আর পাশের ছোট খাল থেকে পানি পান করল। ওই কুটরীতে শুতে লাগলেন, যেটি সে গাছের লাকড়ী-পাতা দিয়ে দিনের খরতাপ ও রাতের ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্যে বানিয়েছেন...

একদিন ব্যবসায়ী চুলায় আগুন দিয়ে তার খানা পাকাচ্ছিলো, এমতাবস্থায় প্রচন্ড বাতাস আসলো, প্রজ্জলিত শুকনো কয়েকটি কাঠ নিয়ে। একটু অসচেতন হতেই প্রজ্জলিত কাঠ তার স্বহস্তে নির্মিত কুটরীকে জ্বালানো শুরু করলো। সে আগুন নেভানোর জন্যে অনেক চেষ্টা করলো, কিন্তু ফল শূন্য দাঁড়ালো, ব্যর্থ হলো। দাউ দাউ আগুনের লেলিহান তার কুটরীকে জ্বালিয়ে দিল... তার একমাত্র সম্বলকে ছাড়খার করে দিলো...
এখন ব্যবসায়ী অধৈর্য হয়ে চিৎকার দেওয়া শুরু করলো, আর্তনাদ সুরে, আকাশ-বাতাস ভারী করে দেওয়া কন্ঠে বললো, হে আল্লাহ! শুধু আমাকেই কেনো এসব পায়...
তুমি অন্যায়ভাবে আমাকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করিয়েছো, আর আমার সব মাল নষ্ট করিয়েছো...
এই দুনিয়ায় আমার জন্যে কিছুই বাকী থাকে নি!
এদিকে আমি এই জায়গায় একেবারে অপরিচিত...
হে প্রভু কেনো সব বিপদ শুধু আমাকেই পায়!??
এরপর ব্যবসায়ী রাতে ক্ষুধার্ত অবস্থায় প্রচন্ড কষ্ট নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে...

অকস্মাৎ, সকালে দেখে কেউ তার জন্যে অপেক্ষা করছে... সে দেখতে পায় একটি জাহাজ তার দ্বীপের দিকে ক্রমেই এগোচ্ছে, ওই জাহাজ থেকে ছোট একটি নৌকা অবতরণ করলো তাকে উদ্ধারের জন্যে...
এরপর যখন ব্যবসায়ী জাহাজের পিঠে উঠলো, তখন সে অধিক আনন্দে বুঝতে পারে নি কী থেকে কী হলো? সে তাদেরকে জিজ্ঞেস করলো, তারা কীভাবে তাকে পেলো, কীভাবে এই দ্বীপ চিনলো?
তারা জবাব দিল,
‘আমরা দেখলাম প্রচন্ড ধোঁয়া, তখন আমরা বুঝলাম, নিশ্চয় কোনো ব্যক্তি সাহায্য চাচ্ছে, এরপর এখানে আসলাম, আপনাকে উদ্ধারের জন্যে’।
এরপর ব্যবসায়ী তার পূর্ণ ঘটনা বর্ণনা করলো, কীভাবে তাকে বাকী সব ব্যবসায়ী চক্রান্ত করে অন্যায়ভাবে সমুদ্রে নিক্ষেপ করেছে।
তখন তারা জবাব দেয়, যে, বাণিজ্যিক ওই জাহাজটি তীরে পৌঁছতে পারে নি, সমুদ্রেই ডুবে গেছে!
তাদের জাহাজে সমুদ্র ডাকুরা হামলা করে, তাদের সবাইকে হত্যা করে তাদের মাল লুট করে নিয়ে যায়। এরপর জাহাজকে ডুবিয়ে দেয়।
তখন ওই ব্যবসায়ী সেজদা দিয়ে কান্নারত অবস্থায় আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করে। এরপর বলে, আলহামদুলিল্লাহ! হে প্রভূ, তোমার প্রতিটি কাজই আমার জন্যে কল্যাণকর... সব প্রশংসা ওই প্রাজ্ঞ মনিবের, যিনি আমাকে নিহত হওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন এবং আমার জন্যে কল্যাণকে নির্বাচন করেছেন...
কতই উত্তম তাঁর প্রতিটি কাজ পরিচালনার পদ্ধতি, যা আমরা জানিই না, যা আমরা বুঝিই না।

যখন পরিবেশ-পরিস্থিতি তোমার প্রতিকূলে চলে যায়, উলটো হয়ে যায়, ভয় পেয়ো না। আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখো, নিশ্চয় তোমার জন্যে কোনো উপায় বের করবেন, তার প্রতি সর্বদা সৎ ধারণা পোষণ করতে থাকো।
জেনো রাখো, আল্লাহ তোমার বিষয় পর্যবেক্ষণ করছেন, তিনিই তোমার উদ্ধারের ব্যবস্থা করবেন।
ইমাম শাফেয়ী রাহ বলেছেন, বিপদে যখন সবাই তোমাকে একা ছেড়ে চলে যায়, তার অর্থ হলো স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তোমার উত্তরণের ব্যবস্থা করবেন।

Friday 3 February 2017

আমার একটা ল্যাপটপ আছে - আমি কি ফ্রিলান্সিং করতে পারব?

আমি প্রায়ই একটি কথা শুনি সেটা হল - ভাই, আমার একটা ল্যাপটপ আছে। আমি কি ফ্রিলান্সিং করতে পারব? ব্যক্তিগতভাবে আমি এই পেশায় খুবই বিরক্ত এবং কেউ এই প্রশ্ন করলে আমার মেজাজটাই খারাপ হয়ে যায়।

প্রশ্ন হল কারণটা কি? উত্তর হল - বাংলাদেশ এই পেশাটাকে এমনভাবে রিপ্রেজেন্ট করছে, ব্যপারটা এমন - ”রহিম মাঠে হাল চাষ করছিল। করিম তাকে ডাক দিয়ে বলল, দোস্ত আয় ফ্রিলান্সিং করি। অতঃপর দুইজন কম্পিউটারের সামনে বসল এবং কয়েক হাজার ডলার কামাই করে ফেলল। অতপর ফেসবুকে স্ট্যাটাস ..... ব্লা .... ব্লা ...... ব্লা....”

একসময় এই পেশাটি ছিল শিক্ষিত মানুষ বা নামি দামি ভার্সিটিতে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের পার্ট-টাইম পেশা। তখন অবশ্য এর আপেক্ষিক গুরুত্ব ছিল নিদারুণ। আয়ের দিক থেকে গড়ে বাংলাদেশ ছিল 2য় অথবা 3য় স্থানে।


বর্তমানে এটা এখন আম-জনতার ডেমো পেশা হিসেবে দাড়িয়েছে। আমি কিন্তু বিরোধী পক্ষ নয়। তবে সফলতার ক্ষেত্রে কিছু ডেডিকেশন আছে। আমি অল্প কিছু তুলে ধরলাম -


1) শেষ কবে যে আমি সারারাত ঘুমায়ছি, আমার নিজেরই মনে নেই।
2) জানতাম মানুষ তিনবেলা ভাত খায়। আমিতো ভুলেই গেছি সকালে কিছু খেতে হয়।
3) আমার কাছে কোনটা দিন আর কোনটা রাত সেটা আবিষ্কার করতে হয় ঘড়ির সময় দেখে।
4) শেষ কবে যে খেলা করেছি সেটার ক্যালেন্ডারও খুজে পাওয়া যাবে না।
5) গার্লফ্রেন্ড মাঝে মাঝে জুটে। সারারাত জেগে থাকি বলে মানষিক রুগী ভেবে অন্য ছেলেদের হাত ধরে।
6) বন্ধুরা সন্ধায় আড্ডা দেয়, আমি বসে বসে মেইল চেক করি।
7) কোথাও গেলে নেট পাওয়া না গেলে টেনশনে মাথা খারাপ হয়ে যায়। এই বুঝি বস মেইল করে কাজ করতে বলল।
8) চোখের তো বারটা আগেই বাজাইছি। আস্তে আস্তে বুকের ও সমস্যা বাধাইছি শুনলাম।
9) সব ক্রিয়েটিভ গুণগুলো হারাইছি। যেমন ছবি আকা, গিটার বাজনো ইটিসি।
10) আমি যে একটা স্বাধীন মানুষ, সেটার ব্যাখ্যাই ভুলে গেছি।
আমি চ্যালেঞ্জ করতে পারি, দুই এ্কটা কম বেশি ছাড়া 80% প্রফেশনাল ফ্রিলান্সারদের অবস্থা সেইম। সেখানে কেউ যদি প্রশ্ন করে - “ভাই, আমার একটা ল্যাপটপ আছে। আমি কি ফ্রিলান্সিং করতে পারব?” আমি তার কি জবাব দেব?


কপি পোস্ট - প্রকৃত লেখকের কোন ইনফরমেশন না জানায় ক্রেডিট দিতে পারলাম না। দুঃখিত :(