Friday 27 October 2017

একবার এক শিক্ষক ক্লাসে ঢুকে ব্লাকবোর্ডে একটা লম্বা দাগ টানলেন

একবার এক শিক্ষক ক্লাসে ঢুকে ব্লাকবোর্ডে একটা লম্বা দাগ টানলেন।
এবার সবাইকে উদ্দেশ্য করে জানতে চাইলেন: -আচ্ছা তোমাদের মধ্যে কে আছো? যে এইদাগটিকে ছোট করতে পারবে? কিন্তু শর্ত হচ্ছে তোমরা একে মুছতে পারবে না!! না মুছেই ছোট করতে হবে!!
তারপর, ছাত্ররা সবাই অপারগতা প্রকাশ করলো। কারণ, মোছা ছাড়া দাগটিকে ছোট করার আর কোনো পদ্ধতি তাদের মাথায় আসছে না!!
এবার শিক্ষক দাগটির নীচে আরেকটি দাগ টানলেন, যা আগেরটির চেয়ে একটু বড়। ব্যস, আগের দাগটি মোছা ছাড়াই ছোট হয়ে গেলো!
শিক্ষক: বুঝতে পারলে তোমরা??? কাউকে ছোট করতে বা হারাতে হলে তাকে স্পর্শ না করেও পারা যায়!!
নিজেকে বড় করো, গড়ে তুলো, তাহলে অন্যের সমালোচনা/ দুর্নাম করে তাকে ছোট করতে হবে না, তুমি বড় হলে এমনিতেই সে ছোট হয়ে যাবে!!
সংগৃহিত

Tuesday 24 October 2017

একজন ভাই মাহফিলের দাওয়াত দিলেন

একজন ভাই মাহফিলের দাওয়াত দিলেন। জিজ্ঞেস করলাম-
- প্রধান অতিথি কে?
- বাতিলের আতংক, পিরে আজম, হক্কানি সিপাহসালার, নুরের তাজাল্লি, হকের খাদেম, আশেকে রাসুল, মাশেকে এলাহি, মর্দে মুজাহিদ, আলেমদের চোখের মনি...
- ভাই শুধু নামটা বলেন।
- বলছি তো... আলেমকুলের শিরোমনি, মাদ্রাসার গর্ব, আলেমদের মাথার তাজ, ইসলামের খাদেম, হাফেজে কুরআন, মুফতিয়ে আজম, ফতোয়ায়ে জিন্দা...
- ভাই নামটা বলবেন প্লিজ?
- আরে ভাই বলছি তো.......হক্কে নুরানী, কুফরির জালজালানি, তাগুতের কিরমিরানি, ইমামের ইমাম, শরীয়তের হাকিকত, মারেফতের কুদরত...
- ধুর মিয়া, রাখেন আপনার মাহফিল। নাম জিগাইয়া আমার ভুল হইছে। মাফ কইরা দেন।
- আরে মিয়া, উস্তাদদের নাম তো মুখে নেয়া যায় না; জানেন না?
- অ। আমাদের নবি কে?
- মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।
– বাহ! নবির নাম তো ঠিকই মুখে নিলেন! তাও আবার কোন বিশেষণ ছাড়াই।

Md Easin Hossain Arzu ভাইর ওয়াল থেকে।

Thursday 19 October 2017

বাংলাদেশের কোন কোন খাবারে শুকরের চর্বি আছে এবং কিভাবে আছে তার বর্ণনা

[অতি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট,
আজ সকালে ইগলুর বক্স মিলিয়ে দেখলাম সত্যিই সেখানে এমন একটি কোড E-471 লেখা আছে যেটি শুকরের চর্বি থেকে উৎপাদিত]
.
শূকরের মাংস ইউরোপ জুড়ে তাদের প্রোটিন বা আমিষ সরবরাহের অন্যতম একটা মাধ্যম। এক হিসেবে দেখা গেছে যে, একমাত্র ফ্রান্সেই প্রায় বিয়াল্লিশ হাজারেরও বেশী শূকরের খামার রয়েছে। ইংল্যন্ডরও আনাচে কানাচে রয়েছে শূকরের খামার।
বাণিজ্যিকভাবে এইসব খামারগুলো পুরো ইংল্যন্ড জুড়েই শূকরের মাংস সরবরাহ করে আসছে। আর ইংল্যন্ডে বসবাস করার কারণে নিত্যদিন চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি ইংরেজদের খাদ্য তালিকায় শূকরের মাংস একটি অতি আবশ্যকীয় ও উপাদেয় তালিকা। কেবল ইংল্যন্ডই নয় বরং পুরো ইউরোপ, আমেরিকা আর প্রাচ্য, অর্থাৎ পুরো খৃষ্ট বিশ্বেই প্রকৃত অবস্থাটি এমনই। এমনকি মুসলিম বিশ্বের কোথাও কোথাও, বিশেষ করে, মুসলিম দেশসমুহে বসবাসকারী অমুসলিম ধর্মালম্বীদের কাছে শূকরের মাংস অতি কাংক্ষিত একটি খাদ্য মাধ্যম।
এই মাধ্যমটি যে আজ নতুন সৃষ্টি হয়েছে তা নয় বরং সেই মধ্যযুগের কিংবা তারও আগে থেকেই এটি বিদ্যমান। শূকরের দেহে সবচেয়ে বেশী চর্বি থাকে এবং সেই চর্বির মধ্যে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর চর্বিও রয়েছে। বস্তুুতান্ত্রিক চিন্তা চেতনায় উজ্জীবিত ইউরোপ জ্ঞান বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে এইসব চর্বিকে বিভিন্নভাবে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে এ থেকে ব্যবহার্য বা খাদ্য জাতিয় বিভিন্ন প্রকার উপকরণ যেমন উদ্ভাবন করেছে তেমনি তা সারা বিশ্ব জুড়েই বাজারজাতও করেছে। আজকাল পুরো ইউরোপ, আমেরিকা আর পশ্চিমা বিশ্ব, এমনকি সমগ্র বিশ্বব্যাপি স্বাস্থ সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে মানুষ খাদ্যে অতিরিক্ত ফ্যাট নিয়ে বড় বেশী চিন্তিত এবং সজাগ। খাদ্যে চর্বির আধিক্যই হৃদরোগের প্রধান কারণ, সেটা বিশ্ববাসী খুব ভালো করেই জেনে গেছে বিজ্ঞানের সুবাদে। শূকরের দেহে সবচেয়ে বেশী চর্বিই কেবল থাকে না বরং সেই চর্বির মধ্যে ক্ষতিকারক উপাদানটির আধিক্যও সবচেয়ে বেশী। ফলে ইউরোপের সচেতন মানুষ শূকরের মাংস খেলেও এর চর্বিকে সব সময় যথাসম্ভব এড়িয়ে চলে বা চলার চেষ্টা করে। এর ফলে শূকর ব্যবসায়ী ও তার মাংস সরবরাহকারীদের একটা বড় অংশই অপচয় হবার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
এইসব অপচয় থেকে বাঁচার জন্যই ইউরোপ শূকরের চর্বির বিকল্প ব্যবহার উদ্ভাবন করেছে। শূকরের চর্বিকে তারা বিভিন্নভাবে বাজারজাত করেছে। এর বহুবিধ ব্যবহারকে নিশ্চিত করেছে প্রসাধনী সামগ্রীর কাঁচামাল, ঔষধের মাধ্যম বা ঔষধ হিসেবে ব্যবহার, শল্য চিকিৎসায় ব্যবহার্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নির্মাণ এবং সবচেয়ে বড় কথা হলো মনুষ্য ও পশু খাদ্য সামগ্রির বিভিন্ন উপাদান হিসেবে এই ক্ষতিকারক বস্তুটিকে ব্যবহার করছে। প্রথমে শূকরের চর্বি দিয়ে সাবান বানানো হয় এবং তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এর পরে একইভাবে ঐ চর্বিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন রকম তরল প্রসাধনী, ক্রিম ইত্যাদি উৎপাদন এবং বাজারজাত করা হয়, এটাও ব্যবসায়িক সফলতা পায়। বন্দুকের কার্তুজে এই শূকরের চর্বি ব্যবহার শুরু হয় সর্বপ্রথমে, উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি কিংবা তারও আগে।
যা হোক, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানীগুলোও তাদের উৎপাদিত ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রীতে এর ব্যবহার শুরু করে। সর্বপ্রথমে শরীরের অভ্যন্তরে সেলাই করার জন্য এমন এক ধরনের সুতোর দরকার পড়ে, যা ক্ষত শুকোনোর পরে খূলে ফেলার প্রয়োজন পড়বে না, এবং শরীরের ভেতরে হবার কারণে তা সম্ভবও নয়, বরং সেলাই কাজে ব্যবহৃত এই সুতো আপনা আপনিই মানুষের মাংসের সাথে মিশে যাবে। এ চিন্তা থেকেই চিকিৎসকরা বেড়ালের অন্ত্রের চর্বি দিয়ে তৈরী করেন এক বিশেষ ধরনের সুতো, যা দিয়ে মানুষের দেশে অস্ত্রোপচারের সময় আভ্যন্তরীণ ক্ষত জোড়া দিতে ব্যবহার করা যাবে। শল্য চিকিৎসক বা সার্জনরা মানুষের শরীরে এরকম যে সুতোর ব্যবহার করেন তাকে ‘ক্যটগাট’ বলা হয়। বেড়ালের চেয়ে শূকরের প্রচলন বেশী এবং শূকরের মাংস ও চর্বি সহজ লভ্য হবার সুবাদে ইউরোপের শূকর খামার ব্যবসায়ী ও চিকিৎসকরা এগিয়ে আসেন এই সুতো নির্মাণে বেড়ালের পরিবর্তে শূকরের চর্বি ব্যবহারে। এবং তারা তা শুরুও করেন।
কিন্তু কিছু সচেতন মুসলমান ইউরোপীয় পণ্যসামগ্রীর গা’এ লিপিবব্ধ উপাদানের তালিকায় pig fat শব্দটি দেখে আঁতকে উঠেন। কারণ যে কোন মুসলমানের কাছে এই pig fat বা শূকরের চর্বি, তার মাংস বা রক্ত সকল কিছুই হারাম, এর যে কোন ধরনের পরোক্ষ ব্যবহারও হারাম। তারা তাদের ভাষণে-বিবৃতিতে, লেখা-লেখনীতে এ ব্যপারে জনগণকে যেমন সতর্ক করেন, তেমনি সরকারের কাছেও দাবী জানাতে থাকেন এইসব ইউরোপীয় পণ্য দেশে আমদানী করারা অনুমতি না দেবার। এর ফলে ইউরোপীয়রা তাদের পণ্যতে pig fat শব্দটির পরিবর্তে 'animal fat' শব্দটি ব্যবহার শুরু করে।
ফলে ইউরোপীয়ান বাবস্যায়ীরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার হারাতে বসে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতেই তারা বিকল্প পন্থা উদ্ভাবন করে। আর এই বিকল্প পন্থাটইি হলো উৎপাদিত কোন বস্তু, তা খাদ্য সামগ্রী হোক বা ঔষধ পথ্য কিংবা প্রসাধনী কিংবা অন্য কিছু, তার গা’এ ইউরোপীয়ান আঈন অনুযায়ী উপাদান সমুহের নাম লেখা হবে বটে তবে সেই সব নামগুলো লেখা থাকবে বৈজ্ঞানিক কোন টার্ম কিংবা সাংকেতিক নাম ব্যবহার করে যেন সাধারণ জনগণ সেই সব নাম, সেইসব টার্ম পড়ে বুঝে উঠতে না পারে, আসলে এই জিনিসগুলো কী?
করপোরেট বাণিজ্যের এই বিশ্বে ব্যবসাীয় মহলের চাপে নতী স্বীকার করে সরকার উৎপাদকদের সাথে আপোষ করে এবং উৎপাদিত পণ্যের গা’এ সাংকেতিক ভাষায় উপাদানসমুহের নাম লিপিবদ্ধ করার অনুমিত দেয়। সেই থেকে শিল্পকারখানায় উৎপাদিত পণ্য, বিশেষ করে, খাদ্য সামগ্রী কিংবা তা প্রস্তুতে ব্যবহৃত উপাদানসমুহে, প্রসাধনী, ঔষধ কিংবা পথ্যের উৎপাদনে সাংকেতিক ভাষায় বিশেষ নাম বা E-Codes ব্যবহার করা হয়, যা আমাদের মত সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য একটি বিষয়।
এরকমই একজন মুসলিম টেকনিশিয়ান কাজ করতেন ফ্রান্সের Pegal শহরে অবস্থিত Departments of Food Administration এর মান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে বা ল্যবরেটরিতে। তিনি অনূসন্ধিৎষূ মন নিয়ে দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় বের করেছেন বেশ ক’টি E-Codes যার প্রত্যেকটিই শূকরের চর্বিকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে। একটি ওয়েব সাইটে Are we eating Pork? শিরোণামে মুসলমানদের উদ্দেশ্যে এক পাকিস্থানী বিজ্ঞানী ড: এম আমজাদ খান কর্তৃক প্রচারিত উক্ত তালিকায় শুকরের চর্বি থেকে প্রস্তুত E-Codes এর তালিকা নিম্নরুপ:
E100, E110, E120, E 140, E141, E153, E210, E213, E214, E216, E234, E252, E270, E280, E325, E326, E327, E334, E335, E336, E337, E422, E430, E431, E432, E433, E434, E435, E436, E440, E470, E471, E472, E473, E474, E475, E476, E477, E478, E481, E482, E483, E491, E492, E493, E494, E495, E542, E570, E572, E631, E635, E904. I
উক্ত তালিকায় উল্লেখিত E-Codes গুলোর বেশ ক’টি আমাদের দেশে প্রাত্যহিক ও দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত জনপ্রিয় খাদ্যতালিকায় উপস্থিত দেখতে পাওয়া যায়। তার দু‘একটা নমুণা দেখুন, যেমন; নিচে উল্লেখিত তালিকায় খাদ্য দ্রব্যের নামের পাশে তাতে ব্যবহৃত E-Codes ও তুলে দেয়া হলো:
1 Cadburrys chocolate - E476
2 Igloo Ice Cream -E471,E433
3 Baskin Robbins Ice Cream E471
4 Foster Clarks Custard Powder-E110
5 Fadeco Ice Cream-E471
6 Nova Chewing Gum -E422
7 Demah Fresh -E422
8 Big Babool Chewing Gum
বলা বাহুল্য, উপরের তালিকায় উল্লেখিত প্রায় সবকটিই আমাদের দেশসহ প্রায় সকল মুসলিম দেশে ছেলে বুড়ো'সহ সকলের কাছেই খুবই প্রিয়।
আল কুরআনে অন্তত চারটি জায়গায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন শূকরের মাংস এবং মৃত জন্তু জানোয়ার আর সেইসব জানোয়ার যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নাম নিয়ে জবাই করা হয়েছে, মুসলমানদের জন্য হারাম করেছেন। তারই একটি আয়াত দেখুন:
তিনি তোমাদের উপরে হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত শূকর মাংশ এবং সেসব জীব জন্তু যা আল্লাহ ব্যতিত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং না-ফরমানী ও সীমালংঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নি:সন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু (সুরা আল বাক্বারা- ১৭৩)
এটা মোটমুটি অমুসলিম ব্যবসায়ীরা জানে, অন্তত তাদের সরকার ও জনগোষ্ঠির সচেতন অংশটি খুব ভালো করেই জানে, কিন্তু তারপরেও তারা ভিন্ন কৌশলে মুসলমানদেরকে আকর্ষণীয় উপস্থাপনায় সেই হারাম বস্তু খাওয়াতে মনে হয় উঠে পড়ে লেগেছে। এর পেছনে কেবল যে তাদের আর্থিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থই আছে তাই নয় বরং এর পেছনে রয়েছে ধর্মীয় বিদ্বেষজনিত এক আগ্রাসী মনোভাব, যার মিল রয়েছে একমাত্র ক্রসেডের সাথেই। সবাই শেয়ার করুন
লেখক: Prof. Dr Mohammad Nurul Huq
Head of the Department of Pediatrics
Bangladesh Medical College and Hospital
R 14A, DRA, Dhaka 1209
Bangladesh.

শুনেছি আমিরুল মু'মিনীন ওমর আজ এ পথে যাবেন

দিনটা ছিল ২ রা নভেম্বর, শনিবার। আগের দিন ১লা নভেম্বর শুক্রবার ভোরে মসজিদে নববিতে ফজরের নামাজে ইমামতির জন্য দাঁড়ানো মাত্রই বসরার গভর্নর হযরত মুগীরা বিন শুরাহ রা: এর মদিনাস্থ পারসিক দাস ফিরোজ আবু লুলু বিষাক্ত ছুরি দিয়ে এক এক করে পর পর ছয়টি আঘাত হানে হযরত ওমর রা: এর পেটে ও তলপেটে। তাঁর নাড়ী ভুড়ি বেরিয়ে যায় সেই আঘাতে।
সেদিনই দুপুরের পরে হযরত ওমর রা: কে একটু দুধ পান করতে দেয়া হলে সেই দুধও হজম ছাড়াই বের হয়ে আসে। তা দেখে সকলেই বুঝে নেন, এ যাত্রা আর খলিফাকে বাঁচানো সম্ভবপর নয়।
খলিফা নিজেও সেটা বুঝে গেছেন। এখন অপেক্ষা কেবল মালাকুল মওতের জন্য। পরদিন শনিবার হযরত ওমর রা: পুত্র প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমরকে কাছে ডেকে নিলেন। আব্দুল্লাহ পিতার মুখের কাছে মাথাটা একটু এগিয়ে নিলে হযরত ওমর রা: অত্যন্ত ক্ষীণ কন্ঠে কিছু একটা বলার জন্য মুখ খুললেন।
কি বলেছেন তিনি? সেটা বলার আগে আরও একটা ঘটনা বলে নেই।
ঘটনাস্থল মদিনা শহর থেকে শ দুয়েক মাইল দুরে সিরিয়ামুখী যাওয়া ৬৫৬ মাইল লম্বা প্রাচীন রাস্তার পাশে এক বেদুঈন পল্লীতে।
সময়কালটা সম্ভবত ৬৩৬-৩৭ খৃষ্টাব্দের দিকে হবে। খলিফা ওমর প্রায়ই মদিনা ছেড়ে রাজ্যের আনাচে কানাচে চলে যেতেন সাধারণ মানুষের খোজ খবর নেয়া ও নিজ চোখে তাদের অবস্থা দেখার জন্য। এরকমই একটা সফরে তিনি এসেছেন এই এলাকায়, সফরসঙ্গী হযরত আলী রা: একটু দুরে কিছু লোকের সাথে কথা বলছিলেন।
এমন সময় তিনি দেখলেন সিরিয়া অভিমুখে চলে যাওয়া পথের পাশে খাটানো একটি তাঁবুর পাশে রাস্তার উপরে এক বৃদ্ধা মহিলা বসে আছেন। কৌতুহলি হয়ে ওমর রা: বুড়ির পাশে থামলেন। তার কাছে জানতে চাইলেন তিনি কেন রাস্তার পাশে একাকী বসে আছেন?
বুড়ি জীবনেও ওমর রা: কে দেখেন নি, তাঁর নামটাই শুনেছেন কেবল। এক আগন্তকের অযাচিত প্রশ্নে বড় নির্লিপ্ততা ও বিরক্তির সাথে বুড়ি বলে উঠলেন;
- শুনেছি আমিরুল মু'মিনীন ওমর আজ এ পথে যাবেন, তার সাথে আমার দেখা করার খুবই দরকার, তাই রাস্তার পাশে তাঁবু খাটিয়ে বসে আছি।
হযরত ওমর রা: হাঁটু গেড়ে বৃদ্ধার পাশে বসলেন। খুব আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইলেন;
- আচ্ছা বুড়ি মা, আমিরুল মু'মিনীন ওমর কেমন লোক?
- ঐ বদ লোকটার কথা আর জানতে চেওনা বাপু, ওর কথা শুনে তোমার কি কাজ? তুমি বরং তোমার কাজে যাও।
- ওমা, সে কি কথা! তুমি খলিফাকে বদলোক বলছো?
- বদলোক বলবো না? তুমিই বলো বাছা, কত কষ্টে দিন পার করছি অথচ আজ পর্যন্ত খলিফার নিকট থেকে একটা কানাকড়িও সাহায্য পেলাম না!
বুড়ির কথা শুনে হযরত ওমর ভেতরে ভেতরে আঁতকে উঠলেন। কোমল কন্ঠে, যেন অনেকটা খলিফাকে এই বুড়ির অভিযোগ থেকে ডিফেন্ড করতে বা বাঁচাতেই বলে উঠলেন;
- মা, তুমি তো খলিফা থেকে অনেক দূরে থাকো, তিনি হয়তো তোমার এই কষ্টের খবরই পান নি।
- দূরে থাকার কারণে তিনি যদি আমার খবরই না নিতে পারেন, তা হলে তাকে খলিফা হতে বলেছে কে?
ক্ষোভ আর অনুযোগ মেশানো কন্ঠে বুড়ি এক ঝটকায় বলে গেলেন কথাগুলো। হজরত ওমর রা: এর কপালে এবারে চিন্তার ভাঁজ পড়লো। নীরব, বাকহীন হয়ে তিনি ভাবনার গভীরে ডুবে গেলেন।
তাই তো, ইসলামি রাজ্যের আনাচে কানাচে এরকম কত অসহায়, দু:স্থ ও অভাবগ্রস্থ মানুষ না জানি পড়ে রয়েছেন, যাদের খবর তিনি নিতে পারেন নি! এদের খবরই যদি তিনি নিতে না পারেন তা হলে তাদের খলিফা হতে গেলেন কেন?
হযরত ওমরের মনোজগতে তখন নীরবে নিভৃতে বয়ে চলেছে এক ঝড়। পাশে বসা বুড়ির সেদিকে কোন খেয়ালই নেই! তিনি বসে আছেন কখনও আমিরুল মু'মিনীন ওমর রা: এই পথে আসেন, তাকে আজ ধরতেই হবে, সে অপেক্ষায়।
ওদিকে হযরত আলি রা: অনতিদুরে লোকজনের সাথে কথা শেষ করে এগিয়ে এলেন ওমর রা: এর খোঁজে। রাস্তার পাশে এক বুড়ির পাশ্বে আমিরুল মু'মিনীনকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে এলেন। হযরত ওমর রা: এর সেদিকে খেয়ালই নেই। তিনি ডুবে আছেন গভীর এক ভাবনার জগতে! হযরত আলি রা: কাছে এসে দাঁড়ালেন এবং আনমনা হয়ে বসে থাকা হযরত ওমর রা: এর মনযোগ আকর্ষণে সালাম দিলেন;
- আসসালামু আলাইকুম ইয়া আমিরুল মু'মিনীন।
হঠাৎ করেই হযরত ওমর রা: এর সম্বিৎ ফিরে এলো যেন। তিনি সালামের জবাব দিলেন। কিন্তু তাঁর পাশে বসে থাকা সেই বুড়ি তা শুনে ফেলেছেন। বুড়ি মহিলা বিষ্মিত হয়ে জানতে চাইলেন;
- আমিরুল মুমিনীন? আ আনতা আমিরুল মু'মিনীন ওমার? (তুমিই কি খলিফা ওমর?)
- হাঁ মা, আমিই তোমাদের হতভাগা খলিফা ওমর। হযরত ওমর রা: এর সকুন্ঠ জবাব।
এবারে বুড়ি লজ্জিত হলেন, ভয়ও পেলেন। আলি রা: আগা মাথা না বুঝলেও কিছু একটা আঁচ করতে পেরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের কথাবার্তা শুনতে লাগলেন। বুড়ি মহিলা হযরত ওমর রা: এর দিকে বিব্রত ও ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকালেন যা হযরত ওমর রা: এর নজর এড়ালো না।
এর পরে হযরত ওমর রা: অনেক্ষণ সময় কাটালেন সেই বৃদ্ধার সাথে, তাকে আশ্বস্থ করলেন। তার অনুযোগ, অভাব অভিযোগের কথা শুনলেন। তাকে রাষ্ট্র থেকে পেনশনের ব্যবস্থা করে দিলেন।
কিন্তু তার ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত অতিবাহিত হওয়া বিগত দিনে রাষ্ট্র থেকে এই বুড়ির পাওনাগুলোর কি হবে? তিনি বসে বসে একটা হিসেব করলেন সেখানে বসেই। বুড়ি মহিলাকেও সেই হিসেবে শামিল করলেন, অংশ নিলেন হযরত আলি'ও।
হিসেব নিকেশ করে দেখা গেল মোটামুটি ২৫টি স্বর্ণমুদ্রা হলে বুড়ির পাওনা পরিশোধ হয়। তিনি তার হাতে পচিশটি স্বর্ণমুদ্রা ধরিয়ে দিলেন। অপ্রত্যাশিতভাবে আশাতিরিক্ত পেয়ে বুড়িও যারপরনাই খুশি। কিন্তু হযরত ওমরা রা: এতটুকুতেই সন্তুষ্ঠ থাকতে পারলেন না।
তিনি বুড়িকে অনুরোধ করলেন, তার ওপর অর্থাৎ আমিরুল মুমিনীন হযরত ওমর রা: এর উপরে বুড়ির যে আর কোনো দাবি নেই, সে কথাটা আলি রা: এর সামনে ঘোষণা দিতে, চাইলে তিনি লিখেও দিতে পারেন।
বুড়ি সানন্দচিত্তে একটা চমড়ার উপরে এরকম না দাবী নামা লেখায় টিপ মারলেন। হযরত ওমর রা: কে আশ্বস্থ করলেন যে, তিনি কাল কেয়মাতের মাঠে খলিফার বিরুদ্ধে কোনো দাবী তুলবেন না।
এক অখ্যাত বৃদ্ধার কাছ থেকে পাওয়া এই শিক্ষা খলিফা ওমরকে এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে, এর পরে তিনি প্রায়ই বলতেন, আল্লাহর কসম, ফোরাতের তীরে একটা কুকুরও যদি না খেয়ে মারা যায়, আমার ভয় হয়, কাল কেয়ামতের মাঠে আমাকে তার জন্যও জবাবদিহী করতে হবে ! এ কথা বলে তিনি কাঁদতেন!
সেই ভয় তাঁর কাটেনি আজও, এই মৃত্যুশয্যাতেও। তিনি পুত্র আব্দুল্রাহ রা: কে বললেন দ্রুত হিসেব করে দেখতে, ক্ষমতারোহনের দিন থেকে একজন খলিফা হিসেবে তিনি কি পরিমাণ অর্থ ভাতা হিসেবে গ্রহণ করেছেন? পরিমান যাই হোক না কেন, মৃত্যুর পর যত দ্রুত সম্ভব ওমর রা: এর সম্পত্তি বিক্রি করে যেন সেই অর্থ পুরোটাই বায়তুল মাল-এ জমা দিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি জানেন না, খলিফা হিসেবে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করতে পেছেন কি না। অতএব তিনি তার প্রাপ্য ভাতাও নেবেন না এই ভয়ে যে, যদি তার দ্বারা দায়িত্ব পালনে গাফিলতি হয়ে থাকে, তা হলে এই ভাতা তার জন্য বৈধ বিবেচিত হবে না।
পরদিন ৩রা নভেম্বর, রবিবার খলিফা ইন্তেকাল করলেন। তাঁর সেই অসিয়ত সহসাই পালন করা হয়েছিল। দীর্ঘ একটি দশক সময়কালে খলিফা হিসেবে নেয়া ভাতা আটষট্টি হাজার দিরহাম রাষ্ট্রিয় কোষাগারে ফেরত দেওয়া হয়েছিল।
ঘটনাটা জানার পর থেকে ভেবে হয়রান হচ্ছি, আমাদের সাড়ে সাত কোটি কিংবা বারো কোটি বা ষোলো কোটি জনতার কাছে কার যে কতটা দায় রয়ে গেছে, তার হিসেব কে রাখে?
রাঘব বোয়ালদের কথা না হয় বাদই দিলাম। আমরা নিজেদের কথাই বলি। সংসারে কতভাবে জেনে বা না জেনে কতজনের কত হক্ব নষ্ট করেছি, বুঝে বা না বুঝে কতজনের উপরে কত জুলুম করেছি, জুলুমের উপলক্ষ্য হয়েছি বা হতে দিয়েছি! আজ এই বয়সে এসে তাদের হাতে সেই বুড়ির মত করে ক'টা স্বর্ণমুদ্রা ধরিয়ে দেবো, সে সামর্থ যেসব বুড়োদের নেই, তাদের কি হবে? প্রশ্নটা কি একটু কঠিন হয়ে গেল?প্রশ্নটা কি একটু কঠিন হয়ে গেল?
**************************************
দিনটা ছিল ২ রা নভেম্বর, শনিবার। আগের দিন ১লা নভেম্বর শুক্রবার ভোরে মসজিদে নববিতে ফজরের নামাজে ইমামতির জন্য দাঁড়ানো মাত্রই বসরার গভর্নর হযরত মুগীরা বিন শুরাহ রা: এর মদিনাস্থ পারসিক দাস ফিরোজ আবু লুলু বিষাক্ত ছুরি দিয়ে এক এক করে পর পর ছয়টি আঘাত হানে হযরত ওমর রা: এর পেটে ও তলপেটে। তাঁর নাড়ী ভুড়ি বেরিয়ে যায় সেই আঘাতে।
সেদিনই দুপুরের পরে হযরত ওমর রা: কে একটু দুধ পান করতে দেয়া হলে সেই দুধও হজম ছাড়াই বের হয়ে আসে। তা দেখে সকলেই বুঝে নেন, এ যাত্রা আর খলিফাকে বাঁচানো সম্ভবপর নয়।
খলিফা নিজেও সেটা বুঝে গেছেন। এখন অপেক্ষা কেবল মালাকুল মওতের জন্য। পরদিন শনিবার হযরত ওমর রা: পুত্র প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমরকে কাছে ডেকে নিলেন। আব্দুল্লাহ পিতার মুখের কাছে মাথাটা একটু এগিয়ে নিলে হযরত ওমর রা: অত্যন্ত ক্ষীণ কন্ঠে কিছু একটা বলার জন্য মুখ খুললেন।
কি বলেছেন তিনি? সেটা বলার আগে আরও একটা ঘটনা বলে নেই।
ঘটনাস্থল মদিনা শহর থেকে শ দুয়েক মাইল দুরে সিরিয়ামুখী যাওয়া ৬৫৬ মাইল লম্বা প্রাচীন রাস্তার পাশে এক বেদুঈন পল্লীতে।
সময়কালটা সম্ভবত ৬৩৬-৩৭ খৃষ্টাব্দের দিকে হবে। খলিফা ওমর প্রায়ই মদিনা ছেড়ে রাজ্যের আনাচে কানাচে চলে যেতেন সাধারণ মানুষের খোজ খবর নেয়া ও নিজ চোখে তাদের অবস্থা দেখার জন্য। এরকমই একটা সফরে তিনি এসেছেন এই এলাকায়, সফরসঙ্গী হযরত আলী রা: একটু দুরে কিছু লোকের সাথে কথা বলছিলেন।
এমন সময় তিনি দেখলেন সিরিয়া অভিমুখে চলে যাওয়া পথের পাশে খাটানো একটি তাঁবুর পাশে রাস্তার উপরে এক বৃদ্ধা মহিলা বসে আছেন। কৌতুহলি হয়ে ওমর রা: বুড়ির পাশে থামলেন। তার কাছে জানতে চাইলেন তিনি কেন রাস্তার পাশে একাকী বসে আছেন?
বুড়ি জীবনেও ওমর রা: কে দেখেন নি, তাঁর নামটাই শুনেছেন কেবল। এক আগন্তকের অযাচিত প্রশ্নে বড় নির্লিপ্ততা ও বিরক্তির সাথে বুড়ি বলে উঠলেন;
- শুনেছি আমিরুল মু'মিনীন ওমর আজ এ পথে যাবেন, তার সাথে আমার দেখা করার খুবই দরকার, তাই রাস্তার পাশে তাঁবু খাটিয়ে বসে আছি।
হযরত ওমর রা: হাঁটু গেড়ে বৃদ্ধার পাশে বসলেন। খুব আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইলেন;
- আচ্ছা বুড়ি মা, আমিরুল মু'মিনীন ওমর কেমন লোক?
- ঐ বদ লোকটার কথা আর জানতে চেওনা বাপু, ওর কথা শুনে তোমার কি কাজ? তুমি বরং তোমার কাজে যাও।
- ওমা, সে কি কথা! তুমি খলিফাকে বদলোক বলছো?
- বদলোক বলবো না? তুমিই বলো বাছা, কত কষ্টে দিন পার করছি অথচ আজ পর্যন্ত খলিফার নিকট থেকে একটা কানাকড়িও সাহায্য পেলাম না!
বুড়ির কথা শুনে হযরত ওমর ভেতরে ভেতরে আঁতকে উঠলেন। কোমল কন্ঠে, যেন অনেকটা খলিফাকে এই বুড়ির অভিযোগ থেকে ডিফেন্ড করতে বা বাঁচাতেই বলে উঠলেন;
- মা, তুমি তো খলিফা থেকে অনেক দূরে থাকো, তিনি হয়তো তোমার এই কষ্টের খবরই পান নি।
- দূরে থাকার কারণে তিনি যদি আমার খবরই না নিতে পারেন, তা হলে তাকে খলিফা হতে বলেছে কে?
ক্ষোভ আর অনুযোগ মেশানো কন্ঠে বুড়ি এক ঝটকায় বলে গেলেন কথাগুলো। হজরত ওমর রা: এর কপালে এবারে চিন্তার ভাঁজ পড়লো। নীরব, বাকহীন হয়ে তিনি ভাবনার গভীরে ডুবে গেলেন।
তাই তো, ইসলামি রাজ্যের আনাচে কানাচে এরকম কত অসহায়, দু:স্থ ও অভাবগ্রস্থ মানুষ না জানি পড়ে রয়েছেন, যাদের খবর তিনি নিতে পারেন নি! এদের খবরই যদি তিনি নিতে না পারেন তা হলে তাদের খলিফা হতে গেলেন কেন?
হযরত ওমরের মনোজগতে তখন নীরবে নিভৃতে বয়ে চলেছে এক ঝড়। পাশে বসা বুড়ির সেদিকে কোন খেয়ালই নেই! তিনি বসে আছেন কখনও আমিরুল মু'মিনীন ওমর রা: এই পথে আসেন, তাকে আজ ধরতেই হবে, সে অপেক্ষায়।
ওদিকে হযরত আলি রা: অনতিদুরে লোকজনের সাথে কথা শেষ করে এগিয়ে এলেন ওমর রা: এর খোঁজে। রাস্তার পাশে এক বুড়ির পাশ্বে আমিরুল মু'মিনীনকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে এলেন। হযরত ওমর রা: এর সেদিকে খেয়ালই নেই। তিনি ডুবে আছেন গভীর এক ভাবনার জগতে! হযরত আলি রা: কাছে এসে দাঁড়ালেন এবং আনমনা হয়ে বসে থাকা হযরত ওমর রা: এর মনযোগ আকর্ষণে সালাম দিলেন;
- আসসালামু আলাইকুম ইয়া আমিরুল মু'মিনীন।
হঠাৎ করেই হযরত ওমর রা: এর সম্বিৎ ফিরে এলো যেন। তিনি সালামের জবাব দিলেন। কিন্তু তাঁর পাশে বসে থাকা সেই বুড়ি তা শুনে ফেলেছেন। বুড়ি মহিলা বিষ্মিত হয়ে জানতে চাইলেন;
- আমিরুল মুমিনীন? আ আনতা আমিরুল মু'মিনীন ওমার? (তুমিই কি খলিফা ওমর?)
- হাঁ মা, আমিই তোমাদের হতভাগা খলিফা ওমর। হযরত ওমর রা: এর সকুন্ঠ জবাব।
এবারে বুড়ি লজ্জিত হলেন, ভয়ও পেলেন। আলি রা: আগা মাথা না বুঝলেও কিছু একটা আঁচ করতে পেরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের কথাবার্তা শুনতে লাগলেন। বুড়ি মহিলা হযরত ওমর রা: এর দিকে বিব্রত ও ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকালেন যা হযরত ওমর রা: এর নজর এড়ালো না।
এর পরে হযরত ওমর রা: অনেক্ষণ সময় কাটালেন সেই বৃদ্ধার সাথে, তাকে আশ্বস্থ করলেন। তার অনুযোগ, অভাব অভিযোগের কথা শুনলেন। তাকে রাষ্ট্র থেকে পেনশনের ব্যবস্থা করে দিলেন।
কিন্তু তার ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত অতিবাহিত হওয়া বিগত দিনে রাষ্ট্র থেকে এই বুড়ির পাওনাগুলোর কি হবে? তিনি বসে বসে একটা হিসেব করলেন সেখানে বসেই। বুড়ি মহিলাকেও সেই হিসেবে শামিল করলেন, অংশ নিলেন হযরত আলি'ও।
হিসেব নিকেশ করে দেখা গেল মোটামুটি ২৫টি স্বর্ণমুদ্রা হলে বুড়ির পাওনা পরিশোধ হয়। তিনি তার হাতে পচিশটি স্বর্ণমুদ্রা ধরিয়ে দিলেন। অপ্রত্যাশিতভাবে আশাতিরিক্ত পেয়ে বুড়িও যারপরনাই খুশি। কিন্তু হযরত ওমরা রা: এতটুকুতেই সন্তুষ্ঠ থাকতে পারলেন না।
তিনি বুড়িকে অনুরোধ করলেন, তার ওপর অর্থাৎ আমিরুল মুমিনীন হযরত ওমর রা: এর উপরে বুড়ির যে আর কোনো দাবি নেই, সে কথাটা আলি রা: এর সামনে ঘোষণা দিতে, চাইলে তিনি লিখেও দিতে পারেন।
বুড়ি সানন্দচিত্তে একটা চমড়ার উপরে এরকম না দাবী নামা লেখায় টিপ মারলেন। হযরত ওমর রা: কে আশ্বস্থ করলেন যে, তিনি কাল কেয়মাতের মাঠে খলিফার বিরুদ্ধে কোনো দাবী তুলবেন না।
এক অখ্যাত বৃদ্ধার কাছ থেকে পাওয়া এই শিক্ষা খলিফা ওমরকে এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে, এর পরে তিনি প্রায়ই বলতেন, আল্লাহর কসম, ফোরাতের তীরে একটা কুকুরও যদি না খেয়ে মারা যায়, আমার ভয় হয়, কাল কেয়ামতের মাঠে আমাকে তার জন্যও জবাবদিহী করতে হবে ! এ কথা বলে তিনি কাঁদতেন!
সেই ভয় তাঁর কাটেনি আজও, এই মৃত্যুশয্যাতেও। তিনি পুত্র আব্দুল্রাহ রা: কে বললেন দ্রুত হিসেব করে দেখতে, ক্ষমতারোহনের দিন থেকে একজন খলিফা হিসেবে তিনি কি পরিমাণ অর্থ ভাতা হিসেবে গ্রহণ করেছেন? পরিমান যাই হোক না কেন, মৃত্যুর পর যত দ্রুত সম্ভব ওমর রা: এর সম্পত্তি বিক্রি করে যেন সেই অর্থ পুরোটাই বায়তুল মাল-এ জমা দিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি জানেন না, খলিফা হিসেবে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করতে পেছেন কি না। অতএব তিনি তার প্রাপ্য ভাতাও নেবেন না এই ভয়ে যে, যদি তার দ্বারা দায়িত্ব পালনে গাফিলতি হয়ে থাকে, তা হলে এই ভাতা তার জন্য বৈধ বিবেচিত হবে না।
পরদিন ৩রা নভেম্বর, রবিবার খলিফা ইন্তেকাল করলেন। তাঁর সেই অসিয়ত সহসাই পালন করা হয়েছিল। দীর্ঘ একটি দশক সময়কালে খলিফা হিসেবে নেয়া ভাতা আটষট্টি হাজার দিরহাম রাষ্ট্রিয় কোষাগারে ফেরত দেওয়া হয়েছিল।
ঘটনাটা জানার পর থেকে ভেবে হয়রান হচ্ছি, আমাদের সাড়ে সাত কোটি কিংবা বারো কোটি বা ষোলো কোটি জনতার কাছে কার যে কতটা দায় রয়ে গেছে, তার হিসেব কে রাখে?
রাঘব বোয়ালদের কথা না হয় বাদই দিলাম। আমরা নিজেদের কথাই বলি। সংসারে কতভাবে জেনে বা না জেনে কতজনের কত হক্ব নষ্ট করেছি, বুঝে বা না বুঝে কতজনের উপরে কত জুলুম করেছি, জুলুমের উপলক্ষ্য হয়েছি বা হতে দিয়েছি! আজ এই বয়সে এসে তাদের হাতে সেই বুড়ির মত করে ক'টা স্বর্ণমুদ্রা ধরিয়ে দেবো, সে সামর্থ যেসব বুড়োদের নেই, তাদের কি হবে? প্রশ্নটা কি একটু কঠিন হয়ে গেল?

Copied from  Zia Ul Haque

Tuesday 17 October 2017

এক ব্যাক্তি সংসদ ভবনের সামনের লোহার গ্রিলে সাইকেল তালা দিয়ে কোথাও যাচ্ছিলো

এক ব্যাক্তি সংসদ ভবনের সামনের লোহার গ্রিলে সাইকেল তালা দিয়ে কোথাও যাচ্ছিলো।
তখন গার্ড এসে বলে,
গার্ডঃ ভাই এখানে সাইকেল রাখা যাবে না। অন্য কোথাও রাখেন।
ব্যাক্তিঃ ভাই আমি একটু পাশেই সুসু দিতে যাচ্ছি। এখনি চলে আসবো।
গার্ডঃ না না এখানে রাখা যাবে না। জানেন না এখান দিয়ে মন্ত্রী মিনিস্টাররা চলাফেরা করে?
ব্যাক্তিঃ সমস্যা নাই ভাই, আমি সাইকেল তালা দিয়ে রেখে যাচ্ছি।

Sunday 15 October 2017

যে দশটি কাজ করলে দশটি বিপদ অবধারিত !!

কিয়ামত পর্যন্ত তার উম্মতরা যাতে ন্যায়ের পথে থেকে
চলতে পারে সেজন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) দিক
নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।এ সম্পর্কিত একটি হাদিস
এখানে উল্লেখ করা হলো। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু
আনহু থেকে বর্ণিতঃ-
রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যখন আমার উম্মত ১০টা কাজ করবে,
তখন তাদের উপর বিপদনেমে আসবে। রাসূল (সা.)-কে
জিজ্ঞাসা করা হলোঃ হে রাসূল, কি সেই দশটি কাজ?
যা করলে বিপদ হবে? তিনি বললেনঃ
১। যখন রাস্ট্রীয় সম্পদকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করা
হবে।
২। যখন আমানত হিসেবে রক্ষিত সম্পদকে লুটের মাল
হিসাবে গ্রহণ করা হবে (অর্থাৎ আত্মসাৎ করা হবে)।
৩। যাকাতকে জরিমানার মত মনে করা হবে।
৪। স্বামী যখন স্ত্রীর আনুগত্য করবে এবং মায়ের অবাধ্য
হবে।
৫। বন্ধুর প্রতি সদাচারী ও পিতার সাথে দুর্ব্যবহারকারী
হবে।
৬। মসজিদে হৈ চৈ হবে।
৭। জনগণের নেতা হবে সেই ব্যক্তি যে তাদের মধ্যেকার
সবচেয়ে নিকৃষ্ট চরিত্রের অধিকারী।
৮। মানুষকে তার ক্ষতির আশংকায় সম্মান করা হবে।
৯। গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের হিড়িক পড়ে যাবে।
১০। উম্মতের পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদেরকে অভিশাপ
দেবে। তখন আগুনের বাতাস আসবে, মাটির ধস ও দেহের
বিকৃতি ঘটবে।” সহীহ তিরমিযী; আততারগীব ওয়াত
তারহীবঃ ৩য় খন্ডঃ ১৫৪১।


Copied

Saturday 14 October 2017

একদিন হযরত ফাতেমা(রাঃ) হযরত আলী(রাঃ) কে বললেন

ঘরে কিছু সুতা কেটেছি, এগুলো বাজারে বিক্রি করে আটা নিয়ে আসেন। ইমাম হাসান ও হোসেন দুই দিন ধরে না খেয়ে আছে।
আলী(রাঃ) সুতা নিয়ে বাজারে গেলেন এবং সুতা ৬ দিরহামে বিক্রি করলেন।
এমন সময় এক সাহাবী এসে বললেনঃ আলী কিছু দিরহাম কর্জ দেবেন? ঘরে স্ত্রী সন্তান না খেয়ে আছে।
হযরত আলী ঐ সাহাবীকে ৬ দিরহামই দিয়ে দিলেন। একটু পর এক লোক একটি উট নিয়ে এসে হযরত আলী(রাঃ) কে বললেনঃ উট কিনবেন ?
আলী(রাঃ) বললেন, আমার কাছে কোন দিরহাম নেই। লোকটি বললোঃ এখন নিয়ে যান। উটের দাম ৩০০ দিরহাম পরে দিয়ে দেবেন। এই বলে লোকটি উট রেখে চলে গেলো।
এমন সময় আরেক লোক এসে ৩০০ দিরহাম দিয়ে উটটি আলী(রাঃ) এর কাছ থেকে কিনে নিলেন।
আলী(রাঃ) তন্ন তন্ন করে খুজেও যিনি উট রেখে গিয়েছিলেন, তাকে বাজারে পেলেন না।
বাড়িতে এসে দেখেন, রাসুলুল্লাহ(সাঃ) ফাতেমার সাথে বসে আছেন। আলীকে দেখেই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, উটের ঘটনা আমি বলবো, না তুমি বলবে ?
আলী(রাঃ) হতভম্ব হয়ে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ, আপনিই বলুন।
রাসুলুল্লাহ(সাঃ) বললেন, তোমার কাছে যিনি বাকীতে উট বিক্রি করেন, তিনি জিব্রাইল। আর যিনি তোমার কাছ থেকে উট কিনেছেন, তিনি ইস্রাফিল ফেরেশতা।
তুমি যে সুতা বিক্রির দিরহাম এক অভাবগ্রস্ত সাহাবীকে দিয়ে দিয়েছো, তার বিনিময়ে আল্লাহ দুনিয়াতেই তোমাকে কিছু পুরস্কার দিলেন। আল্লাহ তোমার কাজটিকে খুব পছন্দ করেছেন। আর তোমার পরকালের পুরস্কারতো জমাই রইলো !!!
----------------- আমিন।

Tuesday 10 October 2017

এক শিক্ষক তার সাত বছরের ছাত্র কাযিমকে জিজ্ঞেস করল

এক শিক্ষক তার সাত বছরের ছাত্র কাযিমকে জিজ্ঞেস করল, “আমি যদি তোমাকে একটি আপেল, একটি এবং আরও একটি আপেল দিই, তাহলে তোমার কাছে মোট কতটি আপেল থাকবে?”
কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যেই কাযিম আত্মবিশ্বাসের সাথে উত্তর দিল, “চারটি!”
বিস্মিত শিক্ষক আশা করেছিলেন সহজ ও সঠিক উত্তরটি (তিনটি), তিনি হতাশ হলেন। “কাযিম বোধয় আমার কথা ঠিকমত বুঝতে পারেনি,” তিনি মনে মনে ভাবলেন। তিনি আবার বললেন, “কাযিম…মনোযোগ দিয়ে শোন। যদি তোমাকে একটি আপেল, একটি আপেল এবং আরও একটি আপেল দিই, তাহলে তোমার কাছে মোট কতটি আপেল থাকবে?”
কাযিম তার শিক্ষকের চোখেমুখে হতাশার ছাপ দেখতে পেল। সে আবার তার আঙ্গুলে গুণে দেখল। কিন্তু এর মাঝে সে সেই উত্তরটি খুঁজছিল, যা তার শিক্ষককে খুশি করবে। কিছুক্ষণ ভেবে দ্বিধান্বিতভাবে সে উত্তর দিল,
“চার…”
শিক্ষকের চোখে মুখে হতাশা রয়েই গেল। তার মানে আসলে কাযিম স্ট্রবেরি পছন্দ করে। তিনি ভাবলেন কাযিম আপেল পছন্দ করে না, আর এটি হয়তো তার মনোযোগ নষ্ট করছে। এবার গুরুত্ব সহকারে ও সামান্য হাসি হাসি মুখে জিজ্ঞেস করলেন, “আমি যদি তোমাকে একটি স্ট্রবেরি, একটি স্ট্রবেরি এবং আরও একটি স্ট্রবেরি দিই, তাহলে তোমার কাছে মোট কতটি স্ট্রবেরি থাকবে?”
শিক্ষকের খুশি খুশি ভাব দেখে কাযিম আবার তার আঙ্গুলে গুণে দেখল। সে কোন চাপ অনুভব করল না এবার, বরং চাপে থাকল তার শিক্ষক। কারণ, তিনি চাইছিলেন তার এবারের প্রচেষ্টাটি সফল হোক।
মুখে সামান্য দ্বিধার হাসি নিয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে কাযিম উত্তর দিল, “তিনটি?”
এবার শিক্ষকের মুখে জয়ের হাসি দেখা দিল। তার প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। কিন্তু একটি কাজ এখনও বাকি। তিনি আবার কাযিমকে জিজ্ঞেস করলেন, “এখন আমি যদি তোমাকে একটি আপেল, একটি আপেল এবং আরও একটি আপেল দিই, তাহলে তোমার কাছে মোট কতটি আপেল থাকবে?”
অনুরোধের সুরে কাযিম উত্তর দিল, “চারটি!”
শিক্ষক আবার বিস্মিত এবং হতাশ হয়ে পড়লেন। সামান্য বিরক্ত কণ্ঠে তিনি জানতে চাইলেন, “কীভাবে কাযিম?”
মৃদু কণ্ঠে কাযিম জবাব দিল, “কারণ আমার
ব্যাগে আগে থেকেই একটি আপেল আছে।”
গল্পের শিক্ষাঃ যখন আপনাকে কেউ কোন ব্যাপারে উত্তর দেয় আর সেটা আপনার আশা করা উত্তরের সাথে না মিলে, তবে ভাববেন না সেটা ভুল। কারণ, তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আপনি হয়তো ব্যাপারটি
ভেবে দেখেননি। তাই প্রতিটি ব্যাপারে আগে মনোযোগ দিয়ে শুনবেন এবং বোঝার চেষ্টা করবেন, তবে অবশ্যই পূর্বনির্ধারিত ধারণা বা বিশ্বাস নিয়ে নয়।

Saturday 7 October 2017

রাসূল (সাঃ) একদিন মসজিদ-ই-নববী'তে আসরের নামাজ পড়াচ্ছিলেন

দৃশ্যটি দেখে বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠল,
আল্লাহ্'র কাছে এমন একটি দৃশ্য খুবই ভাল লেগেছিল;
রাসূল (সাঃ) একদিন মসজিদ-ই-নববী'তে আসরের নামাজ পড়াচ্ছিলেন। তিনি যখন সেজদায় গেলেন, হঠাৎই হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) নানাজীর পিঠের উপর উঠে বসে পড়লেন।

ইমাম হাসান (রাঃ) ও হোসাইন (রাঃ)-কে নবীজী খুবই মহব্বত করতেন। তাঁদের মনে কেউ কষ্ট দিলে তা রাসূলের অন্তরে বিদ্ধ হত।
তিনি হোসাইন (রাঃ) পিঠ থেকে ফেলতেও পারছেন না; নাতিও পিঠ থেকে নামছেন না। এদিকে সেজদাও প্রলম্বিত হচ্ছে।
শেষে তিনি যখন উঠার মনস্থ করলেন; তখনই জিব্রাইল (আঃ) হাজির হলেন। বললেন, রাসূল (সাঃ) আপনি সেজদা থেকে মাথা উঠাবেন না। দৃশ্যটি আল্লাহর খুব পছন্দ হয়েছে। আল্লাহ্ আরশে আজীমে ফেরস্তারাসহ দৃশ্যটা দেখছেন।
সুবহানআল্লাহ; আল্লাহুয়াকবার;
Collected

Tuesday 3 October 2017

ছোট্ট এক ছেলে ছিলো প্রচন্ড রাগী

ছোট্ট এক ছেলে ছিলো প্রচন্ড রাগী। তাই দেখে বাবা তাকে একটা পেরেক ভর্তি ব্যাগ দিল এবং বললো যে, যতবার তুমি রেগে যাবে ততবার একটা করে পেরেক আমাদের বাগানের কাঠের বেড়াতে লাগিয়ে আসবে। প্রথমদিনেই ছেলেটিকে বাগানে গিয়ে ৩৭ টি পেরেক মারতে হলো। ....
পরের কয়েক সপ্তাহে ছেলেটি তার রাগকে কিছুটা নিয়ন্ত্রনে আনতে পারে তাই প্রতিদিন কাঠে নতুন পেরেকের সংখ্যাও ধীরে ধীরে কমে এলো। সে বুঝতে পারলো হাতুড়ী দিয়ে কাঠ বেড়ায় পেরেক বসানোর চেয়ে তার রাগকে নিয়ন্ত্রন করা অনেক বেশি সহজ।
শেষ পর্যন্ত সেই দিনটি এলো যেদিন তাকে একটি পেরেকও মারতে হলো না। সে তার বাবাকে এই কথা জানালো। তারা বাবা তাকে বললো এখন তুমি যেসব দিনে তোমার রাগকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন করতে পারবে....
সেসব দিনে একটি একটি করে পেরেক খুলে ফেলো। অনেক দিন চলে গেল এবং ছেলেটি একদিন তার বাবাকে জানালো যে সব পেরেকই সে খুলে ফেলতে সক্ষম হয়েছে।তার বাবা এবার তাকে নিয়ে বাগানে গেল এবং কাঠের বেড়াটি দেখিয়ে বললো..
'তুমি খুব ভাল ভাবে তোমার কাজ সম্পন্ন করেছো,এখন তুমি তোমার রাগকে নিয়ন্ত্রন করতে পারো কিন্তু দেখো, প্রতিটা কাঠে পেরেকের গর্ত গুলো এখনো রয়ে গিয়েছে। কাঠের বেড়াটি কখনো আগের অবস্থায় ফিরে যাবে না।...
যখন তুমি কাউকে রেগে গিয়ে কিছু বলো তখন তার মনে ঠিক এমন একটা আচড় পরে যায়। তাই নিজের রাগতে নিয়ন্ত্রন করতে শেখো।মানসিক ক্ষত অনেক সময় শারীরিক ক্ষতের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ংকর......
সংগৃহীত

Monday 2 October 2017

এক স্বর্ণকারের মৃত্যুর পর তার পরিবারটা বেশ সংকটে পড়ে গেল

এক স্বর্ণকারের মৃত্যুর পর তার পরিবারটা বেশ সংকটে পড়ে গেল। খাদ্য-বস্ত্রে দেখা দিল চরম অভাব।
স্বর্ণকারের বিধবা স্ত্রী তার বড় ছেলেকে একটা হীরের হার দিয়ে বললো--এটা তোর কাকুর দোকানে নিয়ে যা, বলবি যে এটা বেচে কিছু টাকা দিতে।
ছেলেটা হারটি নিয়ে কাকুর কাছে গেল।
কাকু হারটা ভালো করে পরীক্ষা করে বললো- বেটা, তোমার মাকে গিয়ে বলবে যে এখন বাজার খুবই মন্দা, কয়েকদিন পর বিক্রি করলে ভাল দাম পাওয়া যাবে। কাকু কিছু টাকা ছেলেটিকে দিয়ে বললেন--আপাতত এটা নিয়ে যাও আর কাল থেকে তুমি প্রতিদিন দোকানে আসবে আমি কোন ১দিন ভাল খদ্দোর পেলেই যেন তুমি দৌড়ে হার নিয়ে আসতে পার তাই সারাদিন থাকবে।
পরের দিন থেকে ছেলেটা রোজ দোকানে যেতে লাগলো।সময়ের সাথে সাথে সেখানে সোনা-রুপা-হীরে কাজ শিখতে আরম্ভ করলো।
ভাল শিক্ষার ফলে অল্প দিনেই খুব নামি জহুরত বনে গেল। দূর দূরান্ত থেকে লোক তার কাছে সোনা দানা বানাতে ও পরীক্ষা করাতে আসত। খুবই প্রসংশীত হচ্ছিল তার কাজ।
একদিন ছেলেটির কাকু বললো-- তোমার মাকে গিয়ে বলবে যে এখন বাজারের অবস্থা বেশ ভালো, তাই সেই হারটা যেন তোমার হাতে দিয়ে দেন। এখন এটা বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যাবে।
ছেলেটি ঘরে গিয়ে মায়ের কাছ থেকে হারটি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখলো যে এটা একটা নকল হীরের হার। তাই সে হারটা আর কাকুর কাছে নিয়ে যায় নি।
কাকু জিজ্ঞেস করলো-- হারটি আনো নি ?
ছেলেটি বললো-- না কাকু, পরীক্ষা করে দেখলাম এটা একটা নকল হার।
তখন কাকু বললো- তুমি যেদিন আমার কাছে হারটি প্রথম নিয়ে এসেছিলে সেদিন আমি দেখেই বুঝে নিয়েছিলাম যে এটা নকল, কিন্তু তখন যদি আমি তোমাকে এই কথাটা বলে দিতাম, তাহলে তোমরা হয়তো ভাবতে যে আজ আমাদের মন্দ সময় বলেই কাকু আমাদের আসল জিনিষকে নকল বলছে। আজ যখন এ ব্যাপারে তোমার পুরো জ্ঞান হয়ে গেছে, তখন তুমি নিজেই বলছো এটা নকল হার।
এই দুনিয়াতে প্রকৃত জ্ঞান ছাড়া তুমি যা কিছু দেখছো...যা কিছু ভাবছো সবটাই এই হারের মতই নকল, মিথ্যে। জ্ঞান ছাড়া কোন জিনিসের বিচার সম্ভব নয়। আর এই ভ্রমের শিকার হয়েই অনেক সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। আমি সেই সম্পর্কটা নষ্ট হোক তা চাইনা
Collected.............

বন্ধু বুয়েটে পড়া অবস্থায় ইন্ট্রারে পড়া এক মেয়েকে টিউশনি করাতো

বন্ধু বুয়েটে পড়া অবস্থায় ইন্ট্রারে পড়া এক মেয়েকে টিউশনি করাতো। বন্ধু দেখতে হ্যান্ডস্যাম। পড়তো কম্পিউটার সাইন্সে। ছাত্রী তখন তার রঙীন বয়সটা পার করতেছে। সো যা হবার তাই হলো।
......
সে ইনিয়ে বিনিয়ে বন্ধুকে প্রেম প্রস্তাব দিয়ে বসলো। বন্ধু এই প্রস্তাবের জবাবে শুধু একটা কথায় বলেছিলো "তুমি সবে মাত্র ইন্ট্রারে পড়। কম্পিউটারটা ঠিক মত চালাতে পারো না। তবুও তোমার একটা ল্যাটেস্ট ল্যাপটপ আর একটা ডেক্সটপ আছে। দুইটা সেমিস্টার পার হয়ে গেল। বাবাকে বলেছি কম্পিউটার সাইন্সে পড়ি। একটা কম্পিউটার দরকার। বাবা দিতে পারেন নাই। বাকিটা তুমি বুঝে নিও। কাল থেকে আর পড়াতে আসবো না।" এরপর সেই ছাত্রীর কি হয়েছিলো জানি না। তবে বন্ধু আজ বেশ সফল একজন মানুষ।
......
সেদিন এক বন্ধুর হাতের রান্না খেলাম। খুব সুন্দর রান্না করে। মাংসতে এত ঝাল দিছে যে আমার চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছিলো। বন্ধুকে বললাম "এত ঝাল খাস কেন? বন্ধু বলল "ছোট বেলায় খুব অভাব ছিলো। প্রায়ই শুধু মরিচ দিয়ে ভাত খেতাম। সেই থেকে অভ্যাস হয়ে গেছে"। বন্ধুর জবাবটা এমনই ছিলো।
......
আমি চমকে তাকালাম। নিজের পরিবারের অভাব আর না পাওয়ার গল্প গুলো নিয়ে এত বার এত কিছু লিখেছি যে আর লিখতে ইচ্ছা করে না। আর বর্তমান জেনারেশনের বেশির ভাগই সব পেয়েছির দল (সবাই না)। সো তাদের কাছে এই কচকচানি বিরক্তিকর মনে হতেই পারে।
.......
তবে শুধু এইটুকু বলি "জীবনটাতে টানপোড়ন, স্ট্রাগল, সংগ্রাম এই জিনিস গুলো বড্ড প্রয়োজন। না আমি কারো সামর্থ্য থাকাকে দোষ দিচ্ছি না। সেটা অবশ্যই শুকরিয়া করার বিষয়।
.......
তবে কেউ কেউ চাহিবা মাত্র সবপেয়ে জীবনটাকে বিভিন্ন রং এর সাথে গুলিয়ে ফেলে। তাদের কাছে জীবন মানে একটা সেলফি, চেকইন, ডিজে পার্টি, হ্যাং আউট, বারবিকিউ, কিংবা ভার্চুয়াল কিছু অনূভুতি। তারা কি জানে "বাস্তবটা অত সোজা না। যেখানে একটা স্ট্যাটাস কিংবা দুইটা সেলফি দিয়ে সব কিছু আপডেট রাখা যায় না।
......
বাস্তব জীবনটাকে আপডেট রাখতে হলে ছুটতে হয়। ছুটতে গিয়ে হোঁচট খেতে হয়। হোঁচট খেয়ে ব্যাথা পেলে চোখে জল আসে। সেই চোখের জল মুছে উঠে দাঁড়িয়ে আবার ছুটতে হয়। নইলে জীবন তোমাকে খরচের খাতায় ফেলে দিবে। তুমি হারিয়ে যাবে সব বেহিসেবের আবর্জনায়।
সংগৃহিত

লিবিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুয়াম্মর গাদ্দাফি তার শাসনামলে দেশের নাগরিকদের যেসকল সুবিধা দিতেন

১/দেশের প্রত্যেক নাগরিক বিদ্যুতের সুবিধা পেতো কিন্তু কাওকে বিদ্যুতের বিল দিতে হত না।
২/লিবিয়ার সকল ব্যাংক রাষ্ট্র মালিকানাধীন।দেশের নাগরিকরা সেসকল ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় ঋণ নিতে পারতো কিন্তু এতে করে ব্যাংকে কোন সুদ দিতে হত না।
৩/গাদ্দাফি বিশ্বাস করতেন দেশের প্রত্যেক নাগরিকের বাড়ি পাবার অধিকার রয়েছে।তাই তিনি ঘোষণা দেন দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্যে আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়া অবদি তিনি নিজে এবং তার বাবা মার জন্যে কোন সরকারী বাড়ি বরাদ্ধ করা হবে না।গাদ্দাফির বাবা একটি তাবুতে মারা যান।গাদ্দাফি তার মা এবং স্ত্রীকে নিয়ে একটি তাবুতে বসবাস করতেন।
৪/লিবিয়ায় প্রত্যেক নব দম্পতিকে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার ডলার দেয়া হত,যাতে করে তারা নতুন জীবন সুন্দর করে সাজাতে পারে।
৫/একেবারে বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল প্রত্যেক নাগরিকের জন্যে।গাদ্দাফি ক্ষমতায় যাওয়ার আগে শিক্ষিতের হার ছিল ২৫% আর তার শাসনামলে তা বেড়ে দাড়ায় ৮৩% এ।
৬/প্রত্যেক নাগরিককে বিনামূল্যে সকল ধরণের চিকিৎসা সেবা দেয়া হত।
৭/কেও কৃষি খামার করতে চাইলে তাকে সরকার থেকে জমি,বীজ,সার সহ সকল প্রয়োজনীয় উপকরণ বিনামূল্যে দেয়া হত।
৮/কোন কারণে লিবিয়ার কোন নাগরিককে চিকিৎসার জন্যে কিংবা উচ্চ শিক্ষার জন্যে বিদেশে যেতে হলে সকল খরচ সরকার বহন করতো।
৯/লিবিয়ার মুল আয়ের উৎস হচ্ছে খণিজ তেল রপ্তানি।এই তেল রপ্তানি থেকে যা আয় হত তার একটি নির্দিষ্ট অংশ প্রত্যেক নাগরিকের ব্যাংক একাউন্টে দিতে দেয়া হত।
১০/সন্তান জন্ম দিলে প্রত্যেক নারীকে ৫ হাজার ডলার উপহার দেয়া হত।
...........................ইত্যাদি
গাদ্দাফি ছিলেন ইসলামের জন্যে নিবেদিত প্রাণ।
ইসলামের বীর মরুর সিংহ নামে খ্যাত উমর মুখতার (রহঃ) এর যোগ্য উত্তরসূরি ছিলেন গাদ্দাফি।পশ্চিমা শক্তির জন্যে তিনি ছিলেন ত্রাস।তিনি তার সময়ে লিবিয়ার সেনাবাহিনীকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সেনাবাহিনী হিসেবে গড়ে তুলেন।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্যে গাদ্দাফি ছিলেন সব সময় আপোসহীন।আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলোর অধিকার আদায়ে তিনি ছিলেন স্বোচ্চার।গাদ্দাফি ছিলেন অন্যন্ত দেশ প্রেমিক,মুসলমানদের জন্যে নিবেদিত প্রাণ,সাহসী,স্পষ্টভাষী একজন মানুষ।পশ্চিমা শক্তির রোষানলে পরে তাকে নির্মম ভাবে শাহাদত বরণ করতে হয়।আর তার পরের অবস্থা আপ্নারা সকলেই দেখতে পাচ্ছেন।
Collected