“কি করেন?”
‘চা খাই’
“কি চা?”
‘লেবু চা’
“লেবু চা খাইলে কি হয়?”
‘কি আবার হইবো?’
অনেকের সাথে কথা আগায় না... বাট তাতেও মজা
কয়েকদিন আগে ময়মনসিংহ গেলাম কাজে... কাজ শেষ করে একা হাঁটতে হাঁটতে হাই-ওয়ের পাশে একটা টং এর দোকানে যেয়ে বসলাম
... পাশে ৪ জন হাসিখুশি মানুষ দাঁড়িয়ে ক্যারামবোর্ড খেলছে
হুট করে খেলা নিয়ে ২ জনে মারামারি লেগে গেলো
আলাপ শুনে যা বুঝলাম তা হলো, তার দলের একজন রেড ফেলার চান্স পেয়েও আলসেমি করে অন্য গুটি কেন মারসে, এটা নিয়ে ঝগড়া
কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে “গুলামের পুতরে অক্ষন কুইট্টাল্বাম” বলতে বলতে পাশ থেকে কোদাল নিয়ে দৌড়ান দিলো
আশেপাশের মানুষ ভাবলেশহীন ভাবে বিস্কুট খাচ্ছে
এমন ভাব যে এরকম প্রায়ই হয়
আমি দোকানদারকে বললাম, “ঐ দুইজন কই?”
‘মুমিন্সিং এর লুক বেকতাই এরুম...শৈইল্লো অনেক রাগ’
... বড়ই ইন্টারেস্টিং বিভাগ ... একটু পরে একজন সাফারি পরা লোক আসলো হাতে ব্রিফকেস নিয়ে
“মামা সিগারেট দেও কুইক”
‘কুন কুম্পানি?’
“পারা মাইরা ফুটকাডা গালায়ালবাম... ড্রেরেস দেইক্ষা বুঝো না কুন কোম্পানি চাই?... হলিউড দেও”
আমি চায়ের দাম দিয়ে চায়ের তাড়াতাড়ি চলে আসলাম
...কয়েকদিন আগে, চিটাগাং হালি শহরের এক গলিতে সন্ধ্যায় হাঁটছি
টাইট জিন্সের প্যান্ট পরা এক লোক এসে বলে, “ব্রাদারকে এক্সকিউজমি জানাই... আপনের কাছে মাচেস আছে?”
আমি খুশিতে অবাক... এই প্রথম কেউ নিজ থেকে এগিয়ে এসে আমার সাথে আলাপ করছে
আমি বললাম ‘আমি তো সিগারেট খাই না’
উনি চোখ চিকন করে বললেন, “পকেটে চেক করে দেখেন থাকতেও তো পারে”
তখন বুঝলাম উনি ছিনতাইকারী
আমি বললাম, ‘হ্যা আছে তবে কোন পকেটে লুকিয়ে রেখেছি এটা বলব না...এটা আপনার পরীক্ষা ... আপনি আসেন হাত্রে খুঁজেন’
উনি চিকন চোখ নর্মাল করে বললেন, “ব্রাদারের পরিচয়? গুয়েন্দা অধিদফতুরের লোক লাগে”
আমি বললাম ‘কেমনে বুঝলেন?’
উনি একটা বুদ্ধিদীপ্ত হাসি দিলেন
শুরু হলো আলাপ... এক পর্যায়ে তার পকেটের চাকু দিয়ে গাছ থেকে আমড়া পেড়ে কেটে খেলাম
বিশাল অমায়িক মানুষ... পেটের দায়ে ছিনতাই করে না... শখের বসে করে
সমাজে ব্যাল্যান্স আনার জন্য করে
পুঁজিবাদ সাম্রাজ্যবাদ এসব নিয়ে অনেক আলাপও হলো
শেষে উনি আমাকে হোটেল পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন
...আজ সিলেটে একটু আগে এক চতুরের দেখা পেয়েছি
উনি রাস্তায় ৩ টা মিল্ক ভিটার প্যাকেট নিয়ে জোরে জোরে হাঁটছিলেন
কিছু একটা বলে কথা শুরু করতে হয় তাই আমি উনার কাছে যেয়ে বললাম, ‘ভাই আশেপাশে মিল্ক ভিটার দুধ কই পাওয়া যায়?’
“কয় প্যাকেট লাগবো?”
‘দুই’
উনি দাঁত বের করে বললেন “আমার কাছ থেকে নেন ২ টা”
উনি আমার কাছ থেকে প্রতি প্যাকেটে ১০ টাকা বেশী নিলেন
উনার দাঁত আর বন্ধ হয় না খুশিতে
কিউট না? জায়গার উপরে দাঁড়িয়ে বিনা পুঁজিতে বিজনেস
তুই কিউট হইলে আমি কম কিসে?
আমি বললাম, ‘আমার কালকে ৪০ প্যাকেট লাগবে’
“কখন?”
‘এই সময়েই’
এবার তার দাঁতের চেয়ে চোখের ঝিলিক ছিলো দেখার মত...
কাল কি হবে জানি না... কল্পনা করি, দুই হাতে দুই বালতিতে ২০টা ২০টা প্যাকেট নিয়ে আমাকে অলিতে গলিতে খুঁজবে
ব্যবসা করতে নামসস, বিজনেস স্টাডিসের উপর একটু জ্ঞান রাখবি না বেক্কল? এতো বড় অর্ডার পাইলে কিছু এডভান্স নিতে হয় ... শিখে রাখলি
বেক্কল ……