Thursday 3 August 2017

আমেরিকার এক বিখ্যাত ইসলাম বিদ্বেষী লেখকের ব্লগ পড়ছিলাম

আমেরিকার এক বিখ্যাত ইসলাম বিদ্বেষী লেখকের ব্লগ পড়ছিলাম। গৎবাঁধা লেখা, কিন্ত একটা লেখায় চোখ আটকে গেলো। বিষয়টা বেশ ইন্টারেস্টিং। তিনি মুসলিমদের তুলনা করছেন একটা বিশাল আর্মির সাথে, এবং তার বক্তব্যের সপক্ষে খুব সুন্দর সব যুক্তি দিয়েছেন।
তার লেখাটার সারমর্ম হল মুসলিমদের শুধুই একটা আলাদা ধর্মের অনুসারী হিসেবে দেখলে আমেরিকানরা ভুল করবে। মুসলিমদের দেখতে হবে একটা সুসংহত আর্মির মত। আর তা না করলে মুসলিমরা অচিরেই পুরো বিশ্ব দখলে নিয়ে নেবে।
মুসলিমেরা যে একটা মিলিটারি তা প্রমাণ করতে তিনি বলেছেন-
মুসলিমরা রাত শেষ হবার আগেই, বিছানা থেকে উঠে মসজিদের দিকে চলে যায়, এবং তারা মিলিটারির মত রুটিন মাফিক স্ট্রেচিং আর ড্রিল করে। (তিনি ফজরের সালাতের কথা বলছেন)। কোন কিছুই তাদের এ থেকে বিরত রাখতে পারেনা। কঠিন ঠাণ্ডা, অসুখ, বৃষ্টি, ছুটি কোন অজুহাতই নয়। বিশ্বের কোন মিলিটারিতেও বোধহয় এতো কড়াকড়ি নেই। আরো ভয়াবহ ব্যাপার হল তারা এটা প্রতিদিন পাঁচবার করে। মিলিটারিও ফেইল।
আর্মিরা যেমন একত্রে সংঘবদ্ধ হয়ে মার্চ করে, মুসলিমরাও অণুরূপ জামাতে সমন্বিত (synchronized) ভাবে একতাবদ্ধ হয়ে নামাজ পড়ে। তাদের লাইন ঠিক করা, একত্রে সকল স্টেপ ফলো করা আর্মিকেও হার মানায়।
এরপর তিনি আর্মিরা কেন মার্চ করে সে বিষয় একটু আলোকপাত করলেন।
আমরা তো সবাই আর্মির মার্চ দেখেছি। কোন সময় চিন্তা করে দেখেছেন কেন তারা এটা করে? এটা করে কি লাভ হয়?
আধুনিক যুদ্ধখেত্রে একত্রে মার্চ করার কোন ব্যবহার নেই, বরং এটা করা বোকামি। তাহলে কেন?
কারণ একদল মানুষ যদি কোন কাজ একইভাবে বারবার করে তাদের মাঝে একটা মানসিক (emotional) এবং ভৌত (physical) বন্ধন সৃষ্টি হয়। তারা নিজেদের ব্যক্তিসত্ত্বার পরিবর্তে গ্রুপকে বেশি প্রাধান্য দিতে শিখে। শুধু মার্চ অথবা ড্রিল নয়, যেকোন সমন্বিত কর্মকাণ্ড (যেমন একত্রে খেলা, গান গাওয়া, জামাতে সালাত ইত্যাদি) মানুষের মাঝে সংবদ্ধতা (group coherence) তৈরি করে।
তিনি আরও লিখেছেন, নামাজের ওয়াক্ত হবার সাথে সাথেই মুসলিমরা যেখানেই যে অবস্থাই থাকুক না কেন, তারা সবাই একদিকে মুখ ফেরায় আর নামাজ পড়ে। ফলে বিশ্বব্যাপী তাদের মাঝে এক একাত্মতা তৈরি হয়েছে, যা অন্য কোন ধর্ম/জাতি অথবা বিশ্বাসের মানুষের মাঝে দেখা যায়না। আর এই কারণেই মুসলিমরা মাত্র ১৪০০ বছরের মাঝেই বিশ্বের সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে, এবং তাদের কখনোই পরাজিত করা যায়না।
একটা লোহার খণ্ড কখন চুম্বকে রূপান্তরিত হয়? যখন তার মাঝে যত ইলেক্ট্রন আছে, সব একদিকে মুখ করে।
আলহামদুলিল্লাহ, এভাবে কোন সময় চিন্তা করিনা আমরা, আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়ালা মুসলিমদের দৈনিক কর্মকাণ্ডে কি এক অনুপম শিক্ষা রেখেছেন। এই মুসলিম উম্মা কে একটি দেহের সাথে তুলনা করা হয়, যার কোন অঙ্গে ব্যাথা পেলে সারা শরীরে সেটা অনুভূত হয়!
জামাতে নামাজ পড়ার গূরুত্ব মনে হয় সবচেয়ে বেশী এখানেই!!

No comments:

Post a Comment